হেজমনি বর্তমান বিশ্বে একটি অবশ্যপাঠ্য অনুষঙ্গ, যা প্রতিনিয়ত স্পষ্টাবয়ব নিয়ে ঢুকে পড়ছে কেবল সাহিত্য নয়, একাডেমি ও নন-একাডেমি চর্চার সমস্ত কেন্দ্রবিন্দুতে। উত্তরোপনিবেশিকতা, উত্তরাধুনিকতা কিংবা নিম্নবর্গীয় শিল্প-সাহিত্য কিংবা সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হেজমনি কঠিনভাবে এর শেকড় বিস্তৃত করছে। রাষ্ট্র নিজেও কখনো কখনো নিজের হেজমনিক হয়ে উঠছে। আমরা, যারা তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক, কি এর আগ্রাসি থাবা থেকে দূরে? অবশ্যই, না। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হেজমনি যে ধরন ও অবয়ব নিয়ে উদ্ভাসিত হচ্ছে তা জাতি-রাষ্ট্রের মধ্যে এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের অসমমিতিক আন্তঃনির্ভরতা কিংবা একটি জাতির মধ্যে সামাজিক শ্রেণিগুলোর পার্থক্যগুলো দেখিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু হেজমনি সামাজিক ক্ষমতার চেয়ে বেশি; এটা ক্ষমতা অর্জন ও বজায় রাখার একটি পদ্ধতি। ধ্রুপদি মার্কসবাদী তত্ত্ব, অবশ্যই, সামাজিক পার্থক্যের শক্তিশালী ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে অর্থনৈতিক অবস্থানের উপর জোর দেয়। আজ, কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস শ্রমিকশ্রেণির পুঁজিবাদী শোষণ সম্পর্কে তাদের গ্রন্থ রচনা করার এক শতাব্দীরও বেশি পরে, অর্থনৈতিক বৈষম্য এখনও অন্তর্নিহিত এবং শিল্পোন্নত সমাজে সামাজিক বৈষম্য পুনরুৎপাদনে সহায়তা করে। যদিও বিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সামাজিক হেজমনির পদ্ধতিকে আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল করে তুলেছে। আজকের বিশ্বে, সামাজিক শ্রেণিগত পার্থক্য শুধু অর্থনৈতিক কারণ দ্বারা বা সরাসরি নির্ধারিত হয় না। এ কারণে, হেজমনিপাঠ একান্ত জরুরি হয়ে উঠছে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ অন্যান্য অপরিহার্য অনুষঙ্গগুলো যা যাপনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সেগুলোর সম্পর্কায়নের বিভিন্ন সহিংসতা-নির্যাতন ও শোষণে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা জরুরি নয় কি? তা না হলে কি শিল্প-সাহিত্য, কি সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতি এগুলোর কি মূল্য যাপনের সম্পর্কগুলোতে?
Tk.
200
110
Tk.
350
245
Tk.
715
510
Tk.
160
112