অবিভক্ত বাঙলায় মৈমনসিংহ জেলা ছিল কৃষক আন্দোলনের শক্ত ঘাঁটি। এই জেলার কৃষকদের একটা বড় অংশ মুসলমান এবং আদিবাসী। কৃষক সভার মধ্যে বর্ণহিন্দু, মুসলমান এবং হাজং কৃষক সংগঠিত হয়েছিল। শহরে বসে কৃষি বিপ্লবের স্বপ্ন না দেখে একদল মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী গ্রামে বাস করে কিভাবে কৃষক সভা গড়ে তুলছিলেন শ্রী প্রমথ গুপ্ত তার বর্ণনা দিয়েছেন। জমিদারী প্রথা এবং টংক প্রথার বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল। টংক প্রথার বিরুদ্ধে হাজং কৃষকদের আন্দোলন ছিল সবচেয়ে তীব্র ও ব্যাপক, স্বভাবতই এই আন্দোলন বইতে গুরুত্ব পেয়েছে। শ্রী প্রমথ গুপ্ত টংক প্রথা, নানকার প্রথা, ভাওয়ালী প্রথার সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। বাঙলার কৃষি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য শুধু জমিদারী প্রথা নয়; এই প্রথার মধ্যে বিকশিত হয়েছিল বর্গা, টংক, নানকার প্রভৃতি প্রথা। এই সব প্রথার বৈশিষ্ট্য ফসলে খাজনার হার রাজস্বের হারের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। তদুপরি জমির মালিক চাষের কোন খরচ বহন করতেন না। দেখা গেছে যে এই সব প্রথার বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন অতি দ্রুত ব্যাপক এবং জঙ্গীরূপ নিয়েছে। বর্গা প্রথার বিরুদ্ধে তে-ভাগা আন্দোলন এবং টংক প্রথার বিরুদ্ধে হাজং আন্দোলন এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে। ময়মনসিংহ জেলায় ১৯৪৬ সালে এই দুটি আন্দোলন পাশাপাশি চলছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত টংক প্রথার বিরুদ্ধে হাজং কৃষকদের আন্দোলন বিস্তৃতি লাভ করে। প্রমথ গুপ্ত ময়মনসিংহ জেলার হাজং উপজাতির সমস্যা ও আন্দোলন নিয়ে অনেক বছর ধরে গবেষণা করেছেন। তিনি স্বয়ং হাজং আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও নেতা। হাজং আন্দোলনে যে কৃষকরা পুরোভাগে ছিলেন তাঁদের তিনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন। পেশাদার ঐতিহাসিকদের মতো তিনি শুধু পুরনো দলিলপত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করেননি, তাঁর গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। কৃষক আন্দোলনের ধারা ও প্রকৃতি বুঝতে হলে সরকারী দলিলপত্র যথেষ্ট নয়। মনে রাখতে হবে যারা এই দলিলপত্র লিখেছেন তাঁরা সরকারী কর্মচারী। এবং তাঁদের কাছে কৃষক আন্দোলন শুধু আইন ও শৃঙ্খলার সমস্যা।
Tk.
550
396
Tk.
1400
1330
Tk.
600
450
Tk.
500
375
Tk.
1200
900
Tk.
360
270
Tk.
140
123
Tk.
700
574
Tk.
750
563
Tk.
2200
2090