মানবজীবনে শিষ্টাচারের গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজ গঠনে বা ব্যক্তি গঠনে যার প্রয়োজনীয়তা অতুলনীয়। কোনো জাতিকে সুসভ্য মানুষরূপে গড়ে উঠানোর জন্য শিষ্টাচার অতি গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আমাদের অশান্ত ও উচ্ছৃঙ্খল সমাজে শান্তি আনতে হলে সমাজের মানুষদের শিষ্টাচারসম্পন্ন হতে হবে। কারণ, শিষ্টাচারসম্পন্ন ব্যক্তি কোনো অন্যায়ের সাথে নিজেকে জড়ায় না, কারো সাথে শত্রুতা করে না বা কারো স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটানোর চেষ্টা করে না। শিষ্টাচার হচ্ছে ভদ্র, মার্জিত ও রুচিসম্মত আচরণ। একজন মানুষ ভালো না মন্দ তা বিবেচিত হয় মূলত সে ব্যক্তির আচরণ দেখেই। শিষ্টাচার মানুষকে সংযমী ও বিনয়ী করে তোলে। শিষ্টাচারসম্পন্ন ব্যক্তি তার ভদ্র ও সংযত ব্যবহার দিয়ে যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে। শিষ্টাচারসম্পন্ন মানুষকে সবাই শ্রদ্ধা করে। তাদের স্থান সমাজের উঁচু স্তরে। হোক সে ব্যক্তি অসুন্দর কিংবা গরিব। একমাত্র শিষ্টাচারই মানুষকে প্রকৃত মর্যাদায় ভূষিত করে। ইসলামে শিষ্টাচারকে ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শিষ্টাচারের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয়ই উত্তম চরিত্র, ভালো ব্যবহার ও পরিমিত ব্যয় বা মধ্যপন্থা অবলম্বন করা নবুয়তের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং- ৪৭৭৬) হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) বলেন, ‘তুমি আদব অন্বেষণ করো। কারণ আদব হলো বুদ্ধির পরিপূরক, ব্যক্তিত্বের দলিল, নিঃসঙ্গতায় ঘনিষ্ঠ সহচর, প্রবাসজীবনের সঙ্গী এবং অভাবের সময়ে সম্পদ।’ (ইছবাহানী, মুনতাখাব; সাফারিঈনী, গিযাউল আলবাব : ১/৩৬-৩৭) আহনাফ আল-কায়েস (রহ.) বলেন, ‘আদব বা শিষ্টাচার বিবেকের জ্যোতি যেমন আগুন দৃষ্টিশক্তির জ্যোতি।’ (ফতোয়া আল-মিছরিয়া, ১০/৩৫৯, ‘আদব’ অধ্যায়) রুওয়াইম ইবনু আহমাদ আল-বাগদাদী (রহ.) তাঁর ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমি তোমার আমলকে লবণ ভাববে, আর তোমার আদবকে মনে করবে ময়দা।’ (ড. আলী আব্দুল হামীদ, আত-তাহযীলুদ দিরাসী বিল ক্বাইয়েমিল ইসলামিয়াহ, (বৈরূত : ১ম প্রকাশ, ১৪৩০হি./২০১০খ্রি. পৃ. ১৫৪; আল-কুরাফী, আল-ফুরূক্ব, ৩/৯৬) অর্থাৎ তুমি আমলের চেয়ে আদবকে এত অধিক গুরুত্ব দিবে। লবণ ও ময়দার স্বাভাবিক মিশ্রণে উভয়ের অনুপাত যেভাবে কম-বেশি হয়। সুতরাং মানবজীবনে আদব শিষ্টাচার অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিষ্টাচারসম্পন্ন জীবন গড়ি, আলোকিত সমাজ গড়ি। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
Tk.
560
308
Tk.
200
140
Tk. 260
Tk.
210
137
Tk.
440
273
Tk.
280
168
Tk.
260
160
Tk.
430
279
Tk.
270
203