+880 1521-203767
(Whatsapp,
Imo,
Viber)
ইসলাম বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের ধর্ম এবং দৈনন্দিন বাস্তবতা। ভারতবর্ষে ইসলাম আগমনের পর থেকে তা এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান চর্চা, দর্শন এবং বিশ্বাসের বিষয়। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে এই, ইসলাম যে দার্শনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক তালাশের বিষবস্তু হতে পারে— তা এখানকার প্রগতিশীল মহলের প্রধান অংশ, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইসলামপন্থীরাও মনে করেন না। একদিকে প্রগতির তথাকথিত চাপে ইসলামকে ‘সেকেলে’ ও ‘প্রাক-আধুনিক’ মনে করার চল দেখা যায়, অন্যদিকে কতগুলো অনড় ও একমুখী ধারণাকে ইসলামের নামে চালাতে দেখা যায়। অথচ ইসলাম এক বিপুল বৈচিত্র্যপূর্ণ নানা কিসিমের ধ্যাণধারণা, বিশ্বাস, নৈতিক ও আইনী বিষয়ের সমষ্টি। কাজেই আমরা বরাবরই চেষ্টা করেছি দার্শনিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের এই প্রচণ্ড বাস্তবতার ও সেই সাথে কালচারিক ইসলামের প্রতি খানিকটা সুবিচার করতে। বর্তমান কিতাব সেই প্রয়াসেরই অংশ। ইসলাম নিয়ে যে একেবারেই কোনো আলোচনা হয় না, তা নয়। কিন্তু তার গণ্ডি ও আওতা খুবই সীমিত। মাদ্রাসা ও অপরাপর ইসলামিক কেন্দ্রের বাইরে বৃহত্তর যে সমাজ, বিভিন্ন ছোট ছোট বুদ্ধিবৃত্তিক ব্লক তাদের মধ্যে ইসলাম নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখা যায় না। নিঃসন্দেহে এ এক বড় কূপমন্ডুকতা এবং প্রতিক্রিয়াশীলতা। কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক ব্লকগুলোর মধ্যে আগ্রহ নেই কেন? আগ্রহ না থাকার অনেকগুলো ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। ইসলামকে এ অঞ্চলে, বিশেষত ঔপনিবেশিকতার উদরে উনিশ শতকের ‘আধুনিকায়ন’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ইসলামকে যেভাবে দেখা হয়েছে, তার মধ্যেই এই আগ্রহহীনতার কারণটা নিহিত আছে। এটা আসলে কখনো মনে করা হয় নাই যে ইসলাম নিয়ে খুব একটা কাজ করা দরকার। ইসলাম সম্পর্কে বেশ কয়েকটি এসেন্সিয়ালিস্ট তথা সারবাদী চিন্তাভাবনা এখানে বেশ প্রবল প্রতাপে বিরাজ করতে দেখা যায়। ইসলামপন্থী ও প্রগতিশীল— এই দুই মহলই, তাদের আপাত সব বিরোধিতা সত্ত্বেও ইসলামের একক ও সারবাদী বয়ান নির্মাণের ব্যাপারে তারা একমত। আমরা আসলে ঐরকম কোনো সারবাদী জায়গা থেকে ইসলাম কিংবা কোনো দার্শনিক ধারাকেই দেখি না। আমরা কোনো প্রকারের ভিত্তিবাদী জায়গা থেকে ইসলামের মূল্যায়নে আগ্রহী নই। আমরা মনেকরি কোনো আলাপই শেষ আলাপ নয় এবং প্রত্যেকটি আলাপই উঠে আসা দরকার। ইসলামের যে বিভিন্ন ফেরকা রয়েছে মুতাজিলা তার মধ্যে একটি। মুতাজিলা’র যা কথা, মুতাজিলা যা বলতে চায় ইসলামের অন্যান্য ফেরকার সাথে তার আন্তরিক যোগাযোগ ও লেনদেন হওয়া দরকার। এমনকি মুতাজিলা’র মধ্যেও অনেক মত-দ্বিমত রয়েছে। কোনো মতই শেষ কথা নয় আবার কোনোমতই ফেলনা নয়। একটা মত ‘ভুল’ হলেও যদি সেটা সমাজে হাজির না থাকে, তাহলে তো সেটাকে না মাড়িয়ে অন্য ‘সঠিক’ মতে পৌঁছানো সম্ভব হবে না! ঐতিহাসিক সুদীপ্ত কবিরাজ তত্ত্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটা কথা বলেছেন। তিনি বলছেন আমরা যে তত্ত্বগুলি পড়ি, যে তত্ত্বগুলি আমাদের কাজে লাগে সেগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে— সংশ্লিষ্ট তত্ত্বের রচয়িতা বা লেখকের নিয়ত তদন্ত করা আমাদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত না। আমরা যে রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতিতে আছি, তা মোকাবিলায় তত্ত্বকে কাজে লাগানোই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা দেখি, যে অঞ্চলে যে ধর্মটি প্রধান সেই ধর্মকে প্রাত্যহিক বুদ্ধিবৃত্তিক এবং দার্শনিক চর্চার মধ্যে দিয়ে সমাজের সাথে মিলিয়ে ফেলা হয়েছে। এটা না করলে অবশ্যই সেই ধর্ম তখন যারা চর্চা করে এবং যারা বিরোধিতা করে— দুই দিক থেকেই—এটা একটা এক্সট্রিম জায়গায় চলে যায়। সেটা না করতে হলে কেউ কোনো একটা জিনিস মানবে কি মানবে না সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে আলোচনাকে গড়াতে দেয়া। এরমধ্য দিয়ে যেটা হয়, আমরা আসলে আমাদের গল্পগুলো একজন আরেকজনের কাছে হাজির করতে থাকি। এখান থেকে কে কারটা কতদূর কি নেবে না নেবে, সেটা পরের ব্যাপার। কেউই পুরোটা নিতে পারবে না আবার কেউই পুরোটা ফেলতেও পারবে না। অনেক মানুষ কোনো বিষয় চর্চা করার মানেই হলো তার মধ্যে কিছু না কিছু মেরিট নিশ্চই আছে। তারা যা নিয়ে বিচলিত হয়েছে, তাদের সেই বিচলনের গল্পটা জানার প্রতিই আমরা আসলে আগ্রহী। বর্তমান কিতাবটি সংকলনের সিদ্ধান্তের পেছনে এটা একটা প্রধান বিবেচনা হিসেবে থেকেছে। এই সংকলন ইসলাম কিংবা মুতাজিলা সম্পর্কে চূড়ান্ত কোনো কথা নয়। বলা যায়, কথা শুরুর চেষ্টা মাত্র। এমন একটা জায়গা থেকে বইটিকে উদযাপন করার জন্য পাঠকদের প্রতি আমরা সনির্বদ্ধ আহবান রাখছি।
Tk.
130
78
Tk.
170
107
Tk.
40
23
Tk.
885
400
Tk.
270
162
Tk.
225
169
Tk.
375
262
Tk.
310
260
Tk.
540
400
Tk.
355
266
Tk.
650
390