প্রচলিত অর্থে ইতিহাস কি জিনিস আরবদের কাছে তা স্পষ্ট ছিল না। তাদের কাছে ইতিহাস বলতে বুঝাত কেবল বিভিন্ন গােত্রের পূর্বপুরুষদের নামের ধারাবাহিক তালিকা, তাদের বীরত্ব গাথা, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদির বংশানুক্রমিক স্মৃতিচারণ । নিছক জনশ্রুতি-নির্ভর ইতিহাস সংরক্ষণের এ ধারাটি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াতের মাধ্যমে ইসলামের অভ্যুদয়ের আগেই অতিবাহিত হয়েছিল। তবে নবুওয়াতের সূচনাকালের ধারাটি আরাে স্বচ্ছ ও স্পষ্ট আকার ধারণ করেছিল। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, সাহাবায়ে কিরামের কেউ যে ইতিহাস সংরক্ষণের ব্যাপারে মনােযােগী হতে পারেননি, তার কারণ, তাঁরা জিহাদ ও দেশজয়ের কাজে অতিমাত্রায় ব্যস্ত ছিলেন। এ কাজে সর্বপ্রথম উদ্যোগী হয়েছিলেন তাবিঈদের (সাহাবীদের পরবর্তী প্রজন্ম) একটি দল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের আমলে মুসলমানদের জীবনে যে সব ঘটনা এবং রাসূল (সা)-এর প্রত্যক্ষ তদারকীতে যে সব যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছিল, তাতে সাহাবীদের মধ্য থেকে কারা কারা অংশগ্রহণ করেছিলেন, সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েই তাদেরকে এ কাজের দিকে মনােনিবেশ করতে হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসের প্রচলিত ও বিস্তারিত রূপটি আত্মপ্রকাশ করে উমাইয়া যুগে। অবশ্য বন্ উমাইয়ার ঐতিহাসিকদের ইতিহাস রচনার মূলে যে একটিমাত্র উদ্দেশ্য সক্রিয় ছিল, তা হল বন্ উমাইয়া আমলের প্রধান প্রধান প্রশাসকদের প্রশংসা অথবা এমন কোন বংশীয় বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা, যার সাথে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ জড়িত ছিল। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা লাভই ছিল এ সব তৎপরতার প্রধান লক্ষ্য। দুঃখের বিষয় এই যে, বিভিন্ন বর্ণনাকারীর বর্ণনা থেকে উদ্ধৃত ও সাহিত্য গ্রন্থাবলীর অভ্যন্তরে বিবৃত কিছু কিছু তথ্য ছাড়া এ আমলের সংগৃহীত ইতিহাসের কোন উপাদানই আমাদের কাছে পৌঁছেনি। এর কারণ এই যে, উমাইয়াদের শাসনামলে বিভিন্ন গােলযােগ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হয়। এমনও হতে পারে যে, আব্বাসী শাসকরা উমাইয়া শাসনামলের নিদর্শনাবলী নিশ্চিহ্ন করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই ঐসব উপাদান বিনষ্ট করে দিয়েছিল। অথবা আব্বাসীয়দের প্রতি শুভেচ্ছার নিদর্শন স্বরূপ জনগণ ঐ আমলের রচিত গ্রন্থাবলীকে বর্জন করেছে। তাছাড়া এও একটি বাস্তব ব্যাপার যে, আব্বাসী যুগ না আসা পর্যন্ত ইসলামের সত্যিকার ইতিহাস প্রণয়নের পথ সুগমই হয়নি। এ যুগেই সাধারণ মানুষের ও শাসক শ্রেণীর জীবন বৃত্তান্ত রচিত হয়েছে। সবচেয়ে বস্তুনিষ্ঠ কথা এই যে, ঐতিহাসিক তত্ত্ব, তথ্য ও উপাদান নিয়ে সর্বপ্রথম যে গ্রন্থের আবির্ভাব ঘটে, তা হলাে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। আল্লাহর আয়াতসমূহে বর্ণিত বিভিন্ন ঘটনাবলী থেকে শিক্ষণীয় বিষয় তুলে ধরা এ গ্রন্থের অন্যতম ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য।
Tk.
190
114
Tk.
100
60
Tk.
225
169
Tk.
750
450
Tk.
770
577
Tk.
322
232
Tk.
182
89
Tk.
200
150
Tk.
50
35
Tk.
272
201