আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা য়ুরােপের একটা শ্রেষ্ঠ সাধনা, আজ দেখছি য়ুরােপে এবং আমেরিকায় সেই স্বাধীনতার কণ্ঠরােধ প্রতিদিন প্রবল হয়ে উঠছে।’ তবু তাে রবীন্দ্রনাথ ১৯৫৩-এর যুগে মার্কিন সিনেটর জোসেফ রেমন্ড ম্যাককার্থির আরব্ধ স্বতন্ত্র মতালম্বী ও স্বাধীনভাবে সত্যসন্ধানীদের নিধন ও নিগ্রহ দেখেননি, দেখেননি ভিয়েতনামে মার্কিন বর্বরতা, দেখেননি ইরান দখলের জন্য মার্কিন বিপ্লব সাধনের প্রচেষ্টা যার প্রতিক্রিয়ায় শিয়া কট্টরপন্থীদের অভ্যুদয়। | আবার মার্কিন-ব্রিটিশ-স্প্যানিশ জোট ২০ মার্চ ২০০৩ রাষ্ট্রসঙ্ঘের আপত্তি সত্ত্বেও ইরাকে আগ্রাসী অভিযান চালায়। কেন? না, ইরাক নাকি গণধ্বংসী অস্ত্রের অধিকারী। একটি মিথ্যা অভিযােগ বানিয়ে ওই অ্যাংলাে-স্যাকসন শ্বেতাঙ্গ প্রটেস্টান্ট জোট মানব সভ্যতার বহু প্রাচীন ও মহান নিদর্শন ও বহু নিরপরাধ প্রাণ ধ্বংস করেছে তাদের আসল উদ্দেশ্য সাধনের জন্য। সেই উদ্দেশ্য হলাে তরল স্বর্ণধারা তথা খনিজ তেল সমৃদ্ধ ক্ষেত্রগুলাে দখল করা। যেমন ষােড়শ শতাব্দীতে স্প্যানিয়ার্ডরা মেক্সিকোর মায়া ও পেরুর ইঙ্কা সভ্যতা দুটি ধ্বংস করেছিল ওইসব দেশের স্বর্ণধনের জন্য। ঘটনাক্রমে খনিজ তেল সমৃদ্ধ এশিয়া ও আফ্রিকার অধিকাংশ দেশের ধর্ম ইসলাম। হরিণ যেমন নিজের মাংসে নিজের শত্ৰু, তেমনই এসব দেশের মানুষ নিজেদের সম্পদে নিজেদের শত্রু। আক্রান্তদের ধর্ম যেমন ইসলাম তেমনই আগ্রাসীদের ধর্ম প্রটেস্টান্ট খ্রিষ্টনীতি। যেন এক নয়া ক্রুসেড চলেছে এশিয়া-আফ্রিকা জুড়ে। তার জবাবে শুরু হয়েছে সন্ত্রাসবাদ। অবশ্য মার্কিনরাই সন্ত্রাসবাদের জনক। প্রথমে মার্কিন অস্ত্রে ও অর্থে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর পশ্চিম এশিয়ায় জিয়নবাদী ইহুদিরা নিজেদের একটা গৃহভূমি অর্জনের জন্য সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ১৯৪৭-এর ২৯ নভেম্বরের প্যালেস্টাইন বিভাজনকে অগ্রাহ্য করে ১৯৪৮-এর ১৫ মে বর্তমান ইসরাইল রাষ্ট্র হাসিল করে। ফলে কার্যত নিশ্চিহ্ন হয় তিন হাজার বছরের পুরনাে দেশ প্যালেস্টাইন, তবে কার্যত লুপ্ত দেশ সীমাবদ্ধ অর্থে অস্তিত্ব ফিরে পায় ১৯৯৩-এর ৩০ আগস্ট। যেটা বলতে চাই সেটা এই, সন্ত্রাস যে উদ্দেশ্য সিদ্ধির সফল উপায় হতে পারে তার নজির ও সাবুদ হলাে মার্কিন পরামর্শে ও প্রেরণায় পুষ্ট ডেভিড বেন-গুরিয়ন, ইশাক বেন-জুভি, ইৎশাক শমির, গােল্ডামেয়ার প্রমুখ সন্ত্রাসবাদী জিয়নবাদীদের কায়েম করা ইসরাইল। হিংসা ও প্রতিহিংসার দুষ্ট চক্র অবিরাম আবর্তিত হচ্ছে। মরছে নিরপরাধ নির্দোষ নিরীহ মানুষ। রাষ্ট্রীয় নেতাদের কি ধর্মীয় নেতাদের কাছ থেকে প্রতিকারের আশা নেই। সাধারণ মানুষকেই ভাবতে হবে কী করে তারা ও তাদের সন্তানসন্ততি বাঁচবে। তার জন্য বিদ্বেষ ও হিংসা পরিহার করে তাদের অতীতকে অনুধাবন করতে হবে, বর্তমানকে পরিবর্তন করতে হবে এবং ভবিষ্যৎকে নতুনভাবে নির্মাণ করতে হবে। এই উপলব্ধি থেকেই এই বইয়ের নবীন সংস্করণ প্রকাশিত হচ্ছে।
Tk.
600
492
Tk.
500
275
Tk.
720
396
Tk.
50
36
Tk.
800
440